প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলার ১৯ নম্বর সেক্টরের একটি তাঁবুতে রবিবার বিকালে আগুন ধরে যায়। নিমেষে সেই আগুন বড় আকার ধারণ করতে শুরু করে। আগুনের গ্রাসে চলে যায় আশপাশের বেশ কিছু তাঁবুও। প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলার ১৯ নম্বর সেক্টরের একটি তাঁবুতে রবিবার বিকেলে আগুন ধরে যায়। নিমেষে সেই আগুন বড় আকার ধারণ করতে শুরু করে। আগুনের গ্রাসে চলে যায় আশপাশের বেশ কিছু তাঁবুও। কী থেকে আগুন লাগল, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, তাঁবুগুলির ভিতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁবুর ভিতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। আগুনের জেরে প্রায় পঞ্চাশটি তাঁবু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে।

তবে দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও মৃত্যুর খবর মেলেনি। কুম্ভমেলার জন্য প্রয়াগরাজে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়েছে। বিস্তীর্ণ মেলাপ্রাঙ্গণকে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে আগে থেকে। মোতায়েন রয়েছেন দমকলকর্মীরাও। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন। দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন এবং অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র একটি দলও সেখানে পৌঁছে যায়। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান তাঁরাও। দমকলকর্মী এবং এনডিআরএফের চেষ্টায় আগুন ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি ভানু ভাস্কর জানান, বিকেল ৪টে ৮ মিনিটে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। তিন মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশকর্মীরা। দমকল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলও সেখানে পৌঁছয়। দ্রুত পুণ্যার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল ৪টে ৩০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেক্টর ১৯-এর দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন মেলায় মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীরা। পুণ্যার্থীদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আখড়া থানার ইনচার্জ ভাস্কর মিশ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দু’টি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে এবং তার জেরে তাঁবুগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা পুলিশ জানালেও, কী থেকে আগুন ছড়াল তা এখনও স্পষ্ট নয়। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। কুম্ভমেলার জন্য তৈরি এই অস্থায়ী তাঁবুগুলিতে পুণ্যার্থীদের রান্নার ব্যবস্থা থাকে। সেই থেকেই কোনও ভাবে আগুন ছড়িয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গীতা প্রেসের তাঁবু পুড়ল কুম্ভমেলায়! আগুন ছড়াল কখন? আধিকারিক স্তরে ভিন্ন ভিন্ন বয়ান ঘিরে প্রশ্ন প্রয়াগরাজের জেলাশাসক বলছেন, বিকেল সাড়ে ৪টের সময় আগুন লাগে। উত্তরপ্রদেশের পুলিশের এডিজির দাবি, বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছে। আধিকারিক স্তরে কি সমন্বয়ের অভাব? উঠছে প্রশ্ন। শনিবার বিকেলে প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় আগুন লাগে। পুড়ে যায় গীতা প্রেসের তাঁবু এবং আশপাশের আরও কয়েকটা। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় করেছেন প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর সঙ্গমে পুণ্যস্নান করার জন্য। তার মধ্যেই রবিবার বিকেলে অঘটন ঘটে যায় কুম্ভমেলায়। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। প্রশাসনের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও প্রশ্ন রয়ে গেল পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে। দুর্ঘটনায় কেউ আহত না হলেও, পুড়ে গিয়েছে সারি সারি তাঁবু। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কি পর্যাপ্ত ছিল না? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আগুন লাগার সময় নিয়েও প্রয়াগরাজের জেলাশাসক এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য উঠে এসেছে। কী ভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে যোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

রবিবার বিকেলে আগুনের উৎস ছিল গীতা প্রেসের তাঁবু। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সরকারি ভাবে এ কথা জানানো হয়েছে। গীতা প্রেসের এই তাঁবুটি রয়েছে কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণের ১৯ নম্বর সেক্টরে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি ভানু ভাস্কর জানান, বিকেল ৪টে ৮ মিনিটে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। তিন মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশকর্মীরা। দমকল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলও সেখানে পৌঁছয়। দ্রুত পুণ্যার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল ৪টে ৩০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আপাতত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছে প্রশাসন। গীতা প্রেস থেকেই যে আগুন ছড়িয়েছে, সে কথা পুলিশ এবং জেলাশাসক উভয়েই মেনে নিয়েছেন। তবে কখন আগুন লেগেছিল, সে বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে জেলাশাসকের বক্তব্যের ফারাক দেখা গিয়েছে।

প্রয়াগরাজের জেলাশাসক রবীন্দ্র কুমার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আগুন লাগে। এ দিকে এডিজির বক্তব্য, আগুন লেগেছিল বিকেল ৪টে ৮ মিনিটে। বাড়ি ফিরে এসো! কুম্ভের ‘আইআইটি বাবা’র কাছে আর্তি পরিবারের, ছ’মাস আগে হয়েছিল শেষ কথা আগুন লাগার ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, যোগী পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকদের একটি দলও ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এ কথা জানানোর কিছু সময় পরেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান যোগী স্বয়ং। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। প্রয়াগরাজে পূর্ণকুম্ভের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডল ‘মহাকুম্ভ ২০২৫’ থেকে একটি পোস্ট করে অগ্নিকাণ্ডের কথা জানানো হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, তঅত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মহাকুম্ভে অগ্নিকাণ্ড সকলকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। (পুণ্যার্থীদের) উদ্ধার এবং ত্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। আমরা মা গঙ্গার কাছে সকলের সুরক্ষা প্রার্থনা করছি।’