ত্রিপুরার বিজেপি সরকার সিপিএমকে বিবেকানন্দ ময়দানে প্রকাশ্য সমাবেশের জন্য ব্যবহার করতে দিল না। ২৯-৩০ জানুয়ারী সি পি আই (এম) এর ২৪ তম ত্রিপুরা রাজ্য সম্মেলন। রীতি অনুযায়ী প্রতিটি সম্মেলনের আগে কিংবা পরে প্রকাশ্য সমাবেশ হয়। এবছরও সিপিএম রাজ্য সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ২৯ তারিখ প্রকাশ্য সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভূতপূর্ব আস্তাবল মাঠ বর্তমান বিবেকানন্দ ময়দানে সমাবেশ করার জন্য ত্রিপুরা স্পোর্টস্ কাউন্সিলে দলের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়। স্পোর্টস কাউন্সিল থেকে এ এসময় মাঠে কোন কর্মসূচী নেই বলেও জানায়। সেই মোতাবেক বিবেকানন্দ ময়দানে প্রকাশ্য জনসভার প্রচার রাজ্যব্যাপী দু দফা প্রচার সেরে ফেলে সিপিএম। প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, গোটা রাজ্য থেকে কর্মী সমর্থকদের ব্যাপক সাড়া যখন মিলছে তখন আচমকাই রাজ্য সরকার এখানে স্ব-সহায়ক দলের মেলার আসর বসিয়ে দেয় একেবারে ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত। পার্টির রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর নেতৃত্বে রাজ্য নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সাথে কথা বলেন। তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। মুখ্যমন্ত্রী এরপর আর কিছু জানাননি দেখে ফের জীতেন্দ্র চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করেন। এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন- তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোনভাবেই বিবেকানন্দ ময়দান এই দিন দেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। সমাবেশকে বানচাল করতেই মাঠ না দেওয়া। কোথায় হবে সমাবেশ ? রাজ্য পুলিস রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে ছোট পরিসরে করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু যেভাবে রাজ্যের সব দিক থেকে সাড়া মিলছে তাতে এই ছোট পরিসরে সমাবেশ করা সম্ভব নয়। বিকল্প হিসাবে দলের তরফ থেকে উমাকান্ত স্কুলের মাঠ দিতে অনুরোধ জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী তা দেখছেন বলে জানালেও পরবর্তী সময়ে তাও বাতিল করে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে এই মাঠ দেওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা শোনার পরই বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে গতবছর এই মাঠেই বিজেপি-র জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সিপিএম কর্মীদের বক্তব্য মাঠ কাঁপানো সমাবেশের আঁচ পেয়েই বিজেপি প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সমাবেশ বানচাল করতে চাইছে। এর আগেও সমাবেশগুলোতেও দেখা গেছে ছোট গাড়ি, বাস প্রভৃতি আটকিয়ে রেলের সংখ্যা কমিয়ে সমাবেশকে বানচাল করার চেষ্টা একাধিকবার করেছে। রাজ্য সম্মেলনের সমাবেশের প্রচার চলছে ব্যাপকভাবে। আগরতলার উল্লেখ থাকলেও নির্দিষ্ট স্থানের নাম নেই। কর্মীরা বলছেন গোটা রাজধানীর পথই হবে সমাবেশের স্থান। মাত্র পক্ষকাল আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেছিলেন সিপিএমকে দূরবীন দিয়ে দেখা যাচ্ছে না। তাহলে কেন বিবেকানন্দ ময়দানে এত ভয়? এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে গুঞ্জন বিজেপির মাটি কি নড়ছে।