দুটি গ্রামকে জুড়ে দিতে একটি কাচা সড়ক নির্মাণ করছে বাংলাদেশ। রাঙাউটি সীমান্তের কাছে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৭৫ মিটারের ভেতরে কাজ চলতেই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বাধা দানে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বি এস এফের ১৯৯ ব্যটেলিয়ানের টিলাবাজার ক্যাম্পে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ সংবাদ জানান সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পানিসাগর সেক্টরের ডি আই জি রাজীব বাটসরাজ। শনিবার বিকাল ৫টায় কৈলাসহর টিলাবাজার ক্যাম্পে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান – ‘দু’দিন ধরে বিভিন্ন সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করছে বলে যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে তা ঠিক নয়। মনু নদীর পশ্চিমাংশে বাংলাদেশের শরিফপুর, অলীনগর ও শ্রীমন্তপুর দুটি গ্রামকে জুড়ে দেবার জন্য একটি মাটির সড়ক নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সরকার। ওপারে মনু নদীর পার ঘেষে এই সড়কটি ঘুরে এসে ভারতীয় সীমান্ত গ্রাম রাঙাউটি সীমান্তের ওপারে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে প্রায় সীমান্তের ৭৫ মিটার কাছে নির্মাণ কাজ চলে আসে। বাহিনীর নজরে আসলে গত বছর ৮ নভেম্বর ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের তরফ থেকে আপত্তি জানানো হয়। সেই সময়েই কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর বন্যায় মনু নদীর বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংস্কার করার জন্য রিভার কমিশনে দুই দেশেরই উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তিনি আরও জানান গতকাল ঊনকোটি জেলার জেলা শাসক রাঙাউটি সীমান্তে সরজমিনে বিষয়টি দেখেন। তিনিও বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে কিনা তার খোঁজ খবর নেন।’’ সাংবাদিক সম্মেলনের আগে ডি আই জি রাজীব বাটসরাজ কৈলাসহরের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। এদিকে বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে জানান – বাংলাদেশ সরকার কৈলাসহর সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহা ঊনকোটি জেলার জেলা শাসক এবং কৈলাসহরের মহকুমা শাসককে সরজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। এদিকে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ খালেদ বিন অলীদ জানান -‘‘মনু নদীর বাঁধ নির্মানের কোন কাজই হচ্ছে না। বিগত বন্যায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তা সংস্কার করার জন্য নদী কমিশনে জানানো হয়েছে। দিল্লীর অনুমোদন মিললেই সংস্কারের কাজ হবে।’’ তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর – চাতলাপুর চেকপোস্ট থেকে ১ কিলোমিটার ভেতরে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় পাথরের ব্লক বসিয়ে বাঁধ সামান্য উঁচু করা হয়েছে। আর মৌলভীবাজার জেলার রাজনগরের তারাপাশা এলাকার আধা কিলোমিটার জায়গায় শুধু পাথরের ব্লক ফেলা হয়। অন্যদিকে কমলপুর মহকুমার ভারত বাংলাদেশ মলয়া সীমান্তের ওপারে মকাবিল এলাকায় গত বন্যায় মনু নদীর পার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সংস্কারের কাজ করতে গেলে বি এস এফের বাধায় তা বন্ধ থাকে।