আপ, কংগ্রেস এবং বিএসপি সবক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি ৬৮টিতে। যুযুধান তিন পক্ষের তুমুল চাপানউতরের মধ্যেই সোমবার বিকেল ৫টায় শেষ হল দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচার। অরবিন্দ কেজরীবাল-আতিশী মার্লেনার আম আদমি পার্টি (আপ), নাকি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিজেপি; কারা আগামী পাঁচ বছর দিল্লি শাসন করবে, বুধবার তা ঠিক করবেন দিল্লীর নাগরিকরা ।
সবকটি আসনে লড়লেও রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গরে কংগ্রেস ক্ষমতার দৌড়ে নেই বলেই বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস। বুধবার এক দফাতেই হবে দিল্লির ৭০ বিধানসভা আসনের ভোটগ্রহণ। কংগ্রেসের পাশাপাশি গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আপও ৭০টি আসনে লড়ছে। অন্য দিকে, বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৬৮টি আসনে। একটি করে আসন ছেড়েছে এনডিএ’র দুই সহযোগী, জেডিইউ এবং এলজেপি (রামবিলাস)-কে। ৭০টি আসনে লড়ছে মায়াবতী বিএসপিও।
‘অবসরের পর কোন পদ পাবেন?’ দিল্লিতে প্রচারের শেষ দিনে কেজরীর খোঁচা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে সোমবার প্রচারের শেষ দিনে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাতে কমিশনের একাংশের মদতে ‘হোম ভোটিং’-এর নামে কারচুপি করতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। কী সেই কারচুপি? কেজরীর দাবি, মঙ্গলবার দিল্লির বিভিন্ন বস্তির গরিব ভোটারদের কাছে কমিশনের নাম করে বিজেপির কর্মীরা নকল ইভিএম নিয়ে হাজির হবে। তার পর সেই নকল ইভিএমের বোতাম টিপিয়ে আঙুলে ‘আসল’ কালি লাগিয়ে দেওয়া হবে! এর ফলে পর দিন (বুধবার) কারচুপির ঘটনা জানতে পারলেও ওই ভোটারদের ভোটদানে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না।
পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশের মদতে বিজেপি গুন্ডামি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আপ প্রধান। অন্য দিকে, কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী জঙ্গপুরা আসনে ‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার’ চালানোর সময় অভিযোগ করেন, বিজেপি এবং আপ দু’পক্ষই দিল্লিতে ভোটের আগে ‘ভয়ের বাতাবরণ’ তৈরি করতে সক্রিয় হয়েছে। অন্য দিকে, শেষ দিনের প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিথ শাহ বলেন, ‘‘কেজরীওয়ালের জমানায় দুর্নীতির বন্যা হয়েছে দিল্লিতে। আবগারি দুর্নীতিতে একের পর এক নেতা জেলে গেছেন। পরিবহণ ক্ষেত্র এবং জল নিগম বোর্ডেও বেনজির অনিয়ম হয়েছে।’’ দিল্লির বিধানসভা ভোটে লড়াই এ বার খাতায়-কলমে ত্রিমুখী। শাসকদল আম আদমি পার্টি (আপ)-র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিজেপি এবং কংগ্রেসের। গত বিধানসভা ভোটে ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল আপ। মাত্র ৮টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। কংগ্রেস খাতা খুলতে পারেনি। আপ ৫১ শতাংশ, বিজেপি ৩৯ শতাংশ এবং কংগ্রেস প্রায় সওয়া চার শতাংশ ভোট পেয়েছি। তবে ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত একটানা দিল্লির বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে ত্রিশঙ্কু হয় দিল্লি বিধানসভা। ২০১৫ থেকে জয়ী হয়ে আসছে আপ। লোকসভা ভোটে দিল্লিতে জোট করে লড়লেও বিধানসভা ভোটে আপের সঙ্গে জোট হয়নি কংগ্রেস।
