বিশেষ প্রতিবেদন ঃ গত বছর প্রথমে ব্লক অফিসের কর্মচারী গৌরনগর ব্লক অফিসে। এরপর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য কর্মী, এরপর খোদ গৌরনগর ব্লকের বিডিওকে আক্রন্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর বিদায় নেয়। ২০২৫ সালকে শাসক দলীয় ‘কারিওকর্তারা’ বছর শুরুর দ্বিতীয় দিনে কৈলাসহর মহকুমা কার্যালয়ে দিনদুপুরে ঢুকে কর্তব্যরত কর্মচারীদের আক্রমণ করে। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিয়ত সুশাসনের কথা বললেও বাস্তব চিত্র ঠিক তার বিপরীত। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে ডাক্তারের উপর হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মহকুমা শাসক অফিস চত্বরে ঘটে গেল আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সরকারি কর্মচারী দের নিরাপত্তা কোথায়? প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মহকুমা শাসক অফিস কর্মচারি সহ স্থানীয় শহরের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে কৈলাসহর মহকুমা শাসক অফিসে যায় প্রায় দশবারো জন বিজেপি দল ঘনিষ্ট দুষ্কৃতি। তারা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নথিপত্র নষ্ট করা থেকে শুরু করে অফিসের কম্পিউটার সহ অন্যান্য সরঞ্জাম ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অফিসের কর্মচারীরা অকথ্য গালিগালাজ ও হুমকির মুখে পড়েন। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম বিজেপির ঊনকোটি জেলা সাধারণ সম্পাদকের গাড়িচালক । অফিস কর্মচারীরা জানান, এই ঘটনায় তারা আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতিবাদস্বরূপ কর্মচারীরা শুক্রবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে মহকুমা শাসকের অফিসে কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়, এবং সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হন। এই ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীর সুশাসনের দাবির প্রতি বড় প্রশ্ন চিহ্ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিন সুশাসনের কথা বলেন, কিন্তু অফিসের কর্মীরা যদি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন, তাহলে সেই সুশাসন কোথায়? সরকারি কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ যদি এমন হয়, তবে সাধারণ মানুষ কী আশা করতে পারে?’ মহকুমা শাসক অফিসের রেভেনিউ সেকশনের এক কর্মচারি সংবাদ মাধ্যমকে জানান,এসব ঘটনায় অফিস কর্মচারিরা কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষিত নয়। অভিযুক্তদের মধ্যে বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠতেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরেই অফিস কর্মচারীদের পক্ষে আর,দারলং,সুকান্ত দেববর্মা,জহর দে ও আতাউর রহমান

কৈলাসহর থানায় হামলায় অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী নিলাংশু সেন, দীপন মালাকার, বিক্রম দাস-সহ আরো দশজনের নামে লিখিত অভিযোগ জানান। পাশাপাশি মহকুমা শাসক অফিসের সব কর্মচারীরা একযোগে মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকারের কাছে বিচার চেয়ে স্বারকলিপি দেন। ঘটনার পর কৈলাসহর থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তারা দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উচিৎপুলিস মন্ত্রী হিসেবে এই ঘটনায় যুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা
গ্রহণ করা এবং সরকারি কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এতে শুধু সরকারী অফিসের কর্মচারীদেরই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও নিরাপত্তা এবং সুশাসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে।